Friday, January 15, 2016
এ মাসের কবি – জানুয়ারি ২০১৬ –
মাসুদার রহমান
এ মাসের
কবি মাসুদার রহমান। বাংলাদেশের জয়পুরহাটে সোনাপাড়ার বাসিন্দা তিনি। মাসুদার
রহমানের জন্ম ১৯৭০ সালের ১ সেপ্টেম্বর। এখনো
পর্যন্ত ৮ টি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। প্রথম কবিতার বই ‘বাঘ সমগ্র’, ১৯৯৭
সালে। এছাড়া হাটের
কবিতা (২০১০), উত্তরবঙ্গ সিরিজ (২০১২), সমুদ্র (২০১৩), মাসুদার
রহমানের কবিতা (২০১৩) বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ‘আরক’ প্রকাশনী থেকে সদ্য প্রকাশ পেয়েছে
দীর্ঘকবিতার বই ‘ডাকবাংলো’। মাসুদার রহমানের কবিতার পরবর্তী
বই ‘ডায়ালের জাদু’ আসতে চলেছে আসন্ন ঢাকা বইমেলার আগেই। তার জন্য কবিকে আগাম শুভেচ্ছা। আপাতত, হে পাঠক, আসুন, ওঁর কবিতার এক অফুরন্ত বিস্ময়জগতে...
মাসুদার রহমান-এর কবিতা
আমাদের জাতিসংঘ আমাদের বান কি মুন
আমি ও আমার বউ পালঙ্কের এক-ই পাশে
শোবার দাবি নিয়ে সমস্যা
সমাধান আসছে না বলে বউ প্রায় বলছিল
একবার জাতিসংঘে যাও না গো
একবার বান কি মুনের সঙ্গে দেখা করলেই পার
প্রাইমারি স্কুলে পড়াই; ৯.০০-৪.৩০
আমার সময় কই?
অতএব; মুঠোফোন এস এম এস-ই ভরসা
আর কি সৌভাগ্য; আমাদের উঠোনে পরদিন
বান কি মুনের হেলিক্যাপ্টার অবতরণ করে
আমি ও আমার বউ সহাস্যে হাত বাড়িয়ে দিই
আসুন আমাদের শোবার ঘরে
সরজমিনে একবার তদন্তে আসুন
অ্যাডলফ হিটলারের ঘোড়া
ধানখেতের আলে কেউ ফেলে গেছে একজোড়া চটি
ঘাস কাটতে আসা অ্যাডলফ হিটলার ভাবছেন;
জটিজোড়া হয়তো কোন খেয়ালি মেঘের
গতকাল ধানখেতে রাত্রি কাটিয়ে খুব ভোরে চটি
খুলে আকাশে উড়েছে
আসলে জানে না কবির এই চটিজোড়া
স্বযং কবিই খুলে
ওই দূরে ঘাসে শুয়ে আছে
এখন সন্দেহরা কানে কানে তোমাকে বলছে; কবিকে
না চিনতে পেরে
ঘাসের সঙ্গে কেটে
অ্যাডলফ হিটলার তার ঘোড়াটিকে খেতে দেন কি
না
সানগ্লাস ভেঙে সমুদ্রজন্ম
প্রশ্নের পিঠে এসে আছড়ে পড়ছে প্রশ্ন
দক্ষিণে সমুদ্র তার উত্তরে পাহাড়
শূন্যস্থান
ঠিকশূন্য নয় বলে মৌসুমিবায়ু সক্রিয়
হাওয়া কলের পাখাগুলো ঘূর্ণনে
গর্ভবতী হয়ে উঠে বিদ্যুৎপ্লান্ট
সানগ্লাস চোখে নিঃসীম সমুদ্রে তাকিয়ে
অবাক ! অবাক চোখে ট্যুরিস্ট যুবতী
ক্যাপ্টেনের অবসর
রিটায়ার্ড ক্যাপ্টেন জীবনে কোন তাড়া নেই
কেবল ঘুমোতে গেলে বুঝতে পারেন
আবলুশ কাঠের পালঙ্কটি ভেসে আছে
মাদ্রিদ উপকূলের অনেকটা কাছে
আবারও জাহাজডুবি
দুঃস্বপ্ন জাগিয়ে দিয়ে
মধ্যরাতের ঠোঁট ভিজে নেয় জলভরা গ্লাস
সারাদিন নোনা হাওয়া জল এসে খেলা করে
ম্যানগ্রোভ বনের গভীরে
পেট বিছিয়ে শুয়ে থাকে এক বুড়োবাঘ
কমলালেবু
মুড়িবিক্রেতা পাঁচু গোপালের কাছে শিখেছি
এক কেজি মুড়ি ষাট টাকা দরে
বিক্রি করলে
কাগজের ঠোঙাটিও বিক্রি হয় প্রতি কেজি ষাট
টাকা
কবি এবার কমলালেবুর চাষ শুরু করেছেন
কবিতার দরে বিক্রি করবেন
কমলালেবু
কমলালেবুর দরে কবিতা
হাওয়াবাড়ি
হাওয়াদের বাড়ি। ওদের ড্রয়িংরুমের
নীল দেয়ালের দিকে দেখতে দেখতে
হঠাৎ খেলতে ডাকে উধাও আকাশ
আর ক্যালেন্ডারের পাখিগুলো উড়তে থাকে
আর লাফিয়ে নামে নীল কার্পেটের জলে
হাওয়াদের কিচেনে কোন ফুয়েলিংস্টোভ নেই
নেই ইলেকট্রিক ওভেন
সূর্যঠাকুর ওদের একজনই রাঁধুনি
সমস্ত কিছুই তার সোলার সিস্টেম।
মেঘ আর বৃষ্টিপ্রবণ বড় স্নানঘর। বেডরুম বিছানাটি ঢেউতোলা
আঁতুরঘরের মধ্যে বাচ্চা হাওয়ারা কাঁদছে
কোথাও গর্জনধারি হাওয়াদের স্বর
অ্যাকুরিয়ামের দুর্দান্ত ফিশিং জোনগুলোয়
ফিশারম্যানদের মাছধরা দেখতে দেখতে
আমাদের ইস্টিমার ভেসে যাচ্ছে তার পাশ দিয়ে
স্নান
শীতকালে বৃষ্টি- রূঢ় রসিকতা
হাতে কত কাজ বাকি
ভেড়া ও ছাগলগুলো ঘরে আনো
গরুগুলোর জলভোজন
ও দিকে ঘরে যে নতুন বউ
বাবা ডাকল; এই জগলু
শীতকালে এই বৃষ্টি গমচাষে ভালো নয়
আবারও দৌড়ালো জগলু
গমক্ষেতে
জমানো বৃষ্টির জলে
স্নান করছে শালিক দম্পতি
আংটি
গ্লাসভর্তি জলের মধ্যে
উঁকি দিয়ে দেখি
মুখ ও মন খারাপ
গ্লাসভর্তি জলের ভেতর
আঙুলগুলো
গলে গেছে
ঘুরে ঘুরে নাচছে
জলের তলায়
তোমার থেকে উপহার পাওয়া
এক আংটি বিশেষ
লাভস্টোরি
১
আয়না
ভেঙে গেলো। সামান্য শব্দ হল প্রাসাদের
গভীরমহলে। বাঁশি হাতে নেমে এলো পারদের অতলে লুকিয়ে রাখা
লোক। এই বার এই কথা রাষ্ট্র হয়ে
যাবে
প্রতিজন
প্রেমিকামাত্র রাষ্ট্রপতির মেয়ে। যে
মেয়েরা পড়ে এক চাষিপুত্রের প্রেমে
২
বিমান
বিধ্বস্ত হল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভাঙাচোরা
স্টিলের টুকরো। ক্যাবলস ও প্লাস্টিকের
নাড়িভুঁড়ি। আর খুব মর্মান্তিক; পড়ে থাকা
প্রেমিক প্রেমিকার ছিন্নভিন্ন দেহ। দমকল
কর্মী এসে এতো কিছু উদ্ধার করে নেবে। ফেলে
যাবে জ্বালানি ও ল্যুব্রিক্যান্ট
তরলের ঝাঁজ
যুগল
রক্তধারা গড়িয়ে মিলিত হবে একে অপরের সাথে
অসমাপ্ত আত্মজীবনী
জীবন
সমাপ্তিহীন; অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে ভেসে আসছে
দাঁড়ের শব্দ। গ্রামীণ এক ভোরবেলা; তার
মধ্যে উড়ে যাচ্ছে পাখির কণ্ঠ ও অজস্র গ্যাসবেলুন। নদী ও ধানক্ষেত। কাঠকয়লায় আঁকা
দুর্ভিক্ষ; মৃত মায়ের স্তনে মুখ রেখে শিশু তার জীবন খুঁজছে।
মেঘ
করে আসা আকাশের নিচে এক অস্থির পৃথিবী। বজ্র
চীৎকার...
পাঞ্জাবি পরা পাখি
সাদা
পায়জামা ও পাঞ্জাবি পরিহিত পাখি; ওর লম্বা গলা
বাড়িয়ে দিলো। তখনও মাসিমা রাগি চূড়ার মাথায় ফিতে দুটি সেপটিপিনে গাঁথছেন। তখনও খোলা আছে মার্বেল গড়িয়ে যাওয়ার মতো নাভির গর্ত...
সেই
অবলঙ বাড়িয়ে দেওয়া গলা; আর যায় কোথায়
ঈশাণে
কালবোশেখি ঝড়ের পটভূমিকায় সাদা বক উড়ে যাচ্ছে বাঁশবাগানের দিকে
ডাকবাংলো
ক.১
দোলনাটি দুলে যাচ্ছে । নিঃসঙ্গ ।
অদ্ভুত কেয়ারটেকার বিশাল গাছের নিচে
দড়ির খাটিয়া পেতে ঘুমিয়েছে
নিচে ওর কুকুর ভুলুয়া
অচমকা মাথা টেনে উঠে বসে কুকুরটি তাকিয়ে
আছে
দূর সড়কের দিকে । কিছু রহস্যের দিকে...
ক.২
পথের দু’পাশে ঘনগাছপালা । তার
পাশ দিয়ে যেতে
মনে হলো- একেই তা হলে বলে
সবুজ ইশারা ?
অথবা অরণ্যের জাদু ? কিংবা দূরের মায়া !
আরও পরে স্পষ্ট হবে; বনের গভীরে গোপনক্ষত
এবং যা অনিরাময়যোগ্য
সেই ডাকবাংলো
আমাদের গাড়ির গতির সঙ্গে উড়তে থাকা ধুলো ও
শব্দে
খুলে যাচ্ছে তার প্রতিটি দরজা-জানালা
জেগে উঠছে কেয়ারটেকার ও তার চঞ্চলতা
অভ্যর্থনায় নড়ে উঠছে কুকুরের লেজ
ক.৩
পাকশালা । উনুনে আগুন জ্বলছে । দুপুরের ভূরিভোজ
মন্দ হবে না
কাটা মুরগির পাশে ইস্পাতের ছুরি; তার
রক্তমাখা জিহ্বার দিকে
তাকিয়ে রয়েছে দাঁড়কাক
কাক বলতেই তা ট্রেড হিউজের
হিউজ ও সিলভিয়া প্লাথ তাহাদের
মধুচন্দ্রিমায়
এই ডাকবাংলোয় এসেছিল কি না আজ আমরা জানি না
আমরা জেনেছি; স্টোভের আগুনে যদি কবির শরীরও
পোড়ে
কবিতা পোড়ে না
ক.৪
দুপুরের বনের মধ্যে বিকেলের ছায়া দুলে আছে
অদ্ভুত নির্জনতা
পাখিদের চুপচাপ ! নতুন আগন্তুকে সন্দেহ
বুঝি ?
এখন পাখির গানে ভেসে যাচ্ছে বন
বাংলোর জানালা খুলে সবুজ পাতার ফাঁকে
হাল্কা কুয়াশা মোড়া দূরের গির্জার চূড়া
দেখা যায়
শুকনো পাতার ওপরে গিরগিটির ছুটে যাওয়া
দূরে কোথাও যেন পাহাড়ি ঝর্ণার শব্দ একটানা
কাঠঠোকরার ঠকঠক
একেই বলে কি না অরণ্যের ডাক !
ক.৫
মাউথঅর্গান বাজানো পাখি ডাকছে ; দূর
পৃথিবীতে
হারিয়ে যাওয়া
সন্ধ্যা নামের এক পড়শি বোনকে
দিনশেষে এখনও তাই সন্ধ্যা নেমে আসে
গাছের আড়ালে কে ? ছায়ামূর্তি !
রহস্য উন্মোচনে নেমেছে কি শার্লক হোমস
কাঁপছে বাতাসে উঁচু ঘাসবন
সাপের জিভের জেরক্স
ক.৬
অ্যালানপোর কালো বিড়াল অন্ধকারে
লাফ দিলো
দোলক চেয়ার খানা দুলিও না । মোম আনো ।
রাইটিং টেবিলের উপর দেয়াশলাই । আগুন জ্বালাতে
গিয়ে
গোঁফ পুড়ে গেছে
ডাবল জানালা খোলা । একটানা ঝিঁঝিঁকথা ।
পড়ে আছে কবির পাণ্ডুলিপি… চাঁদের গরল
ক.৭
আপেলকাটাছুরি । আর ডাকবাংলোর ঘরে বিস্তারিত আয়না
জেগে আছো ?
ঘুমিয়ে পড়ার পর মেয়েটিকে
নিজহাতে নৃশংস খুন করবো আমি
এবং মৃত্যু’পর নির্জন বাংলো জুড়ে মেয়েটির প্রেত-আত্মা
কীভাবে দাপাবে
অন্ধকারে শোন তার
ফিসফাস...
রিহার্সেল চলছে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
আমরা জেনেছি; স্টোভের আগুনে
ReplyDeleteযদি কবির শরীরও পোড়ে
কবিতা পোড়ে না
Thankx !
DeleteBolar moto bhasha pachhi na. ...osamanyo onobodyo bolleo jothesto noy. ...porar somoy mone holo jeno British modern age er kono kobir lekha porchhi...etotai mugdho. .." Dakbanglo" sarabiswer ....somokalin jekono shrestho kobitar modhye ekti ...
ReplyDeleteআমার সৌভাগ্য, আপনার অসামান্য মন্তব্যের জন্য। ধন্যবাদ।
Deleteভাই মাদুদার তোমার কবিতা তারিফ করে থেমে যাবার নয়।এবার তোমার কবিতায় ব্যঙ্গবিদ্রুপের দেখা পেলাম যা কলমকে দীপ্র করেছে।আমার ভালো লেগেছে তা।তোমার মৌলিক চিন্তা ভাবনা ও ভাষা ব্যবহার প্রশংসনীয়।ম্যাজিক রিয়ালিজম এভাবেই সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে।একটু বানান ভুলের দৌরাত্ম্য আছে।মাসুদার ভাই তুমি এরকমই আরো লেখ।আমরা সাপের জিভের জেরক্স চিনে পথ চলব।
ReplyDeleteভাই মাসুদ, তোমার কবিতা কেমন হলো এক কথায় তা বলা সম্ভব না।তবে সবগুলো কবিতা পড়েছি।আমি পড়ে পড়ে স্ত্রীকে শোনালাম।দুজনে চমৎকার আনন্দ উপভোগ করলাম।সঞ্জয় সোম।
ReplyDeleteভাই মাসুদ, তোমার কবিতা কেমন হলো এক কথায় তা বলা সম্ভব না।তবে সবগুলো কবিতা পড়েছি।আমি পড়ে পড়ে স্ত্রীকে শোনালাম।দুজনে চমৎকার আনন্দ উপভোগ করলাম।সঞ্জয় সোম।
ReplyDeleteলেখাগুলো পড়ে ভাল লাগল, সে কারণেই আপনার হিউমার অব সেন্স আর কনসাসনেস ঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলছে বলে মনে হল। 'ডাকবাংলো'আমার স্মৃতিতে প্রতিবিম্ব তৈরি করে থেকে যেতে পারবে বহুদিন। শুভ কামনা।
ReplyDeleteমাসুদর রহমানের ডাকবাংলো সিরিজের ৭ টি কবিতাসহ মোট ১২ টি কবিতা সংকলিত হয়েছে বাক ৯৫ পর্বে। অদ্ভুত এক কল্প-বাস্তবতার জগত থেকে কবিতা লেখেন মাসুদর। যেখানে গৃহপালিত দাম্পত্য সমস্যা সমাধানে আসতে হয় রাষ্ট্র সংঘের মহাসচিব বান কি মুন-কে।
ReplyDeleteআবার এই সময়ে দেখা যাচ্ছে সভ্যতার ত্রাস অ্যাডলফ হিটলার তার ঘোড়াটির জন্য ঘাস কাটতে বাধ্য হয়ে এসেছেন বাংলার সবুজ প্রান্তরে।
টুরিস্ট কবিতার একটি লাইন- হাওয়া কলের পাখাগুলোর ঘূর্ণনে গর্ভবতী হয়ে ওঠে বিদ্যুৎপ্লান্ট।
সমুদ্রের ঢেউ আর রঙিন চশমার সম্পর্কের কথার ভেতরে আমরা পৌঁছে যাই কক্সবাজার না হলেও গোয়ার কোনো সোনালি বিচে।
ক্যাপ্টেনের অবসর কবিতায় কবি রিটায়ার্ড ক্যাপ্টেনকে মিলিয়ে দিতে পারেন পেট বিছিয়ে শুয়ে থাকা সুন্দরবনের বাঘের সাথে। রাতের খাট ভাসতে থাকে মাদ্রিদ উপকূলে। এই সব বহুমাত্রিক ভাবনাগুলো কখনো অসঙ্গত বা আরোপিত বোধ হয় না, এখানেই কবিতার জাদুখেলা।
পরক্ষণেই কবি কমলালেবু কবিতায় মুড়ি, মুড়ির ঠোঙা ও কবিতার বাণিজ্যে মেতে ওঠেন। ঝরে পড়ে আক্ষেপ। আমার আছে এই পর্বের সেরা নির্মান হাওয়াবাড়ি। যেখানে শব্দরা স্বাধীনতা পেয়ে গেছে কলমের ডগায়। এক অদ্ভুত আনুভবের জগতে নিয়ে তোলেন পাঠকে। প্রকৃতি ও প্রেমের সম্পূর্ণ এক ক্যানভাস। তার পরেই স্নান ও আংটি কবিতা দুটিকে পলকা লাগে। উড়ান বা বিস্তার নেই।
লাভস্টোরি-তে দুটি ভাগ- প্রথমটি সনাতনী ২য় টি আধুনিক, ধ্বংসের পরেও মিলনের আকাঙ্ক্ষা।
অফুরান গ্রামীণ জীবনের ভগ্নাংশ তুলে এনেছেন অসমাপ্ত আত্মজীবনী-তে এবং তার অস্থিরতা। বকেরা যে পাঞ্জাবি পরে এবং অবশ্যই সাদা, এ খবর পাওয়া যায় এবং মার্বেল গড়িয়ে যাওয়া নাভির গর্তের হদিশও দেন কবি।
ডাকবাংলো সিরিজের সাতটি কবিতায় চেনা এক বনবাংলোর ছবি। যেখানে অপেক্ষা করে থাকে কেয়ারটেকার ও তার পোষা কুকুর ভুলুয়া। মনে রাখার মতো তাৎপর্য পূর্ন কিছু শব্দসারি সাজিয়ে দিয়েছেন কবি- 'অভ্যর্থনায় নড়ে উঠছে কুকুরের লেজ', কাটা মুরগির পাশে ইস্পাতের ছুরি; রক্তমাখা জিহ্বার দিকে তাকিয়ে দাঁড়কাক।',কবির শরীর পোড়ে কবিতা পোড়ে না।',কাঠঠোকরার ঠক ঠক একেই বলে কি না অরণ্যের ডাক।', কাঁপছে বাতাস উঁচু ঘাসবন সাপের জিভের জেরক্স'।
শেষ পর্বে এসে নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না কবি। একটা নির্মিত স্নিগ্ধতাকে ভেঙে দিতে খুন চেপে বসে। নারী নয়, আমরা হত্যা করি প্রকৃতিকেই। শেষের সে দিন যেন এগিয়ে আসছে- তারই সতর্কবার্তা শোনান আমাদের প্রিয় কবি মাসুদার রহমান।